‘ড. এ এইচ এম আব্দুল হাই’ একজন লেখক-গবেষক, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। ১৯৭৮ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এ্যাড.মো.সেরাজুল হক এবং মাতা মতিয়ারা বেগম।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর সেখান থেকেই সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা। তবে সাংবাদিকতা শুরু ২০০১ সালে ডেইলি স্টার পত্রিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এর রাজশাহী প্রতিনিধি হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। টেলিভিশন সাংবাদিকতায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে বিটিভি থেকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পান। আর ২০০৭ সালে দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার ও ফেলোশিপ প্রদান করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম উন্নয়ন সংস্থা প্যানোস। এছাড়া সাংবাদিকতার পাশাপাশি বেশ কিছু উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করেন – সেগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইউনিসেফ, কেয়ার, সিসিডি, প্যানোস, বিএনএনআরসি, বাসুগ ডায়াসপোরা ও উন্নয়ন, সেরাজি ফাউন্ডেশন, এশিয়ান-ইউরোপিয়ান মিডিয়া নেটয়ার্ক – এমনেট, ইন্টেগ্রেশন হাউজ অন্যতম।
২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জার্মানির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগ এবং টেলিভিশন শাখায় সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ২০১৪ সালে জার্মানির বন ইউনিভার্সিটি, হোকশুলে বন-রাইন-জিগ এবং ডয়েচে ভেলে একাডেমির যৌথ মাস্টার্স প্রোগ্রাম অন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া স্টাডিজ সফলভাবে সম্পন্ন করেন। মিয়ানমারে সাংবাদিকতা শিক্ষা এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ে ২০২৩ সালে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি গবেষণা সম্পন্ন করেন। তাঁর গবেষণার ফলাফল গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশ করেছে জার্মানির জনপ্রিয় প্রকাশনা রেগিওস্পেক্ট্রা। ২০২৩ সাল থেকে জার্মানির উন্নয়ন সংস্থা লাইফ লার্নিং ডেভেলপমেন্ট এর উপদেষ্টা হিসেবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তরুন-যুবকদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাগত উন্নয়নে গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করছেন।
নেশা কবিতা আর গল্প লেখা। বাংলা, ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় লেখা তাঁর কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ ইতিমধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, জার্মানি এবং ফ্রান্স থেকে প্রকাশিত সাহিত্য সংকলন, সাময়িকী, পত্রিকা এবং অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে জার্মান, বাংলা ও ইংরেজি তিন ভাষায় প্রকাশিত অনলাইন গণমাধ্যম আওয়ার ভয়েস সম্পাদনা করেন। ২০১৬ সালে তিনি আরও দু’জন সহকর্মীর সাথে যৌথভাবে জার্মানির বার্লিন থেকে হোস্টরাইটার প্রদত্ত বর্ষসেরা পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ২০১৭ সাল থেকে জার্মান উন্নয়ন সংস্থা ওয়ান ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্ক এ প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে জার্মানির বন থেকে বাংলা ও জার্মান দুই ভাষায় প্রকাশিত ষান্মাসিক সাময়িকী সীমান্ত বা ডি গ্রেন্সে’র সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গণমাধ্যম ফাউন্ডেশন এনপিএফ এর মিডিয়া ফেলোশিপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে বিরল অসুখ বৃক্ষমানব-মানবীদের নিয়ে তাঁর গবেষণা প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পর্যায়ে বিতর্ক, মঞ্চ নাটক, কবিতা আবৃত্তি, সংবাদ পাঠ এবং উপস্থাপনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং অংশ গ্রহণ করেছেন। আন্তর্জাতিক সমাজসেবা সংস্থা রোটারী ক্লাবের যুব সংগঠন রাজশাহীস্থ বরেন্দ্র রোটার্যােক্ট ক্লাবের সভাপতি ছিলেন ডঃ আব্দুল হাই। এছাড়া সমাজসেবার ব্রত নিয়ে ২০১৭ সালে জার্মানিতে প্রতিষ্ঠা করেন সেরাজি ফাউন্ডেশন। এই সংগঠনের কর্মসূচী হিসেবে নিয়মিত বাস্তবায়ন করছেন কমিউনিটি ক্লিনিং, সামাজিক সুসম্পর্কের মাধ্যম হিসেবে দাবা প্রতিযোগিতা, বর্ণবাদ ও বৈষম্য বিরোধী শিল্প ও সাহিত্য সম্মেলন, কবিতা পাঠের আসর ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রবাসে বাংলা ভাষার চর্চা ও সম্প্রসারণের জন্য জার্মানির বন নগরীতে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং ইন্টেগ্রেশন হাউজ এ বাংলা ভাষা ও কবিতা চর্চার প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন দীর্ঘ এক দশক ধরে। মাতৃভাষা বাংলার পাশাপাশি তাঁর দক্ষতা রয়েছে ইংরেজি, জার্মান, ডাচ, স্প্যানিশ, ফরাসি, আরবি, উর্দু, হিন্দি এবং বার্মিজ ভাষায়।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সৌন্দর্য ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশ ও উন্নয়নের ধারা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ইতিমধ্যে ভারত, চীন, ম্যাকাউ, নেপাল, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক, জার্মানি, স্পেন, ইটালি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, লুক্সেম্বুর্গ, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, কসভো, পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, যুক্তরাজ্য, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড এর বিভিন্ন এলাকা সফর করেছেন। { অসমাপ্ত…/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’
www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ১ম ও ২য় খণ্ড) লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}