জি.কে.এম শামসুল হুদা

বিশিষ্ট রাজনীতিক, সমাজসেবী ও সাংবাদিক জি.কে.এম শামসুল হুদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পোল্লাডাঙ্গা মহল্লার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাওলানা হেসামুদ্দীন হাসু মৌলভী ছিলেন তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের একজন স্বনামধন্য ইসলামী চিন্তাবিদ ও সমাজসেবী । তাঁর মাতার নাম শামসুন্নাহার।
শামসুল হুদা চাঁপাইনবাবগঞ্জের হেফজুল উলুম মাদ্রাসা থেকে দাখিল, আলিম এবং শিবগঞ্জের রাধাকান্তপুর মাদ্রাসা থেকে ফাজিল ও বগুড়ারার মোস্তাফাবিয়া মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে টাইটেল পাস করেন। জেনারেল লাইনে তিনি নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ (অর্থনীতি) ডিগ্রীও অর্জন করেন।
ছাত্রাবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ৬০ এর দশকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে প্রো-ভিপি (উপ সহ-সভাপতি) নির্বাচিত হন। বৃহত্তর রাজশাহী তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম ছাত্রনেতা জি.কে.এম শামসুল হুদা পরবর্তীতে নবাবগঞ্জ মহকুমা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘সংগঠক’ হিসেবে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের জন্য তিনি ‘সমাজসেবী হোদা চেয়ারম্যান’ হিসেবে এলাকায় সুনাম অর্জন করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট রাজনীতিক জি.কে.এম শামসুল হুদা। ১৯৭৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে অংশগ্রহণও করেন। সমাজসেবী শামসুল হুদা নিজ এলাকায় ‘পোল্লাডাঙ্গা সমাজসেবক সংঘ’ প্রতিষ্ঠা করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ‘শঙ্করবাটি পোল্লাডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে’ প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল কলেজে কয়েকবছর অধ্যাপনাও করেন। শুধু রাজনীতিক, সমাজসেবী এবং শিক্ষক হিসেবেই নয়, ভালো সাংবাদিক হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক এ.বি.এম মুসার হাতধরে, বাংলাদেশ টাইমস পত্রিকা দিয়ে তাঁর সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয়। মৃত্যুঅবধি তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এবং বাংলাদেশ বেতারের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী জি.কে.এম শামসুল হুদা ১৯৯৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী মৃত্যুবরণ করেন। { অসমাপ্ত…/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য মূল গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী)