আনোয়ার জাহিদ রুবেন

বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবী ‘ডা. আনোয়ার জাহিদ রুবেন’ ১৯৬২ সালের ৭ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণগোবিন্দপুর এলাকার মিঞাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রফেসর আবুল হায়াত মিঞা চাঁপাইনবাবগঞ্জের গুণি শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
স্ত্রী-রোগ অভিজ্ঞ ও সোনোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ (নবাবগঞ্জে প্রথম) হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন ডা. আনোয়ার জাহিদ রুবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসার (ক্লিনিক) হিসেবে সুনাম ও সাফল্যের সাথে দীর্ঘ ৩০ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের সু-চিকিৎসার লক্ষ্যে, স্থানীয় অন্যান্য চিকিৎসকদের নিয়ে যৌথভাবে ১৯৮৮ সালে সেবা ক্লিনিক (চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রথম বেসরকারি আধুনিক হাসপাতাল)’ প্রতিষ্ঠা করেন। সুনাম ও সফলতার সাথে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত এই ক্লিনিকের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডা. আনোয়ার জাহিদ রুবেন।
শুধু চিকিৎসক নয়, সমাজসেবী হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে। গরীব-অসহায়, দু:স্থ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন। ২০১৬ সালে স্থানীয় মানুষদের নিয়ে মহানন্দা প্রবীণ নিবাস নামে চাঁপাইনবাবগঞ্জ তথা বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে প্রথম একটি আশ্রয়কেন্দ্র (প্রবীণনিবাস) গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। অসহায়, বৃদ্ধ মানুষদের আজীবন থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা লক্ষ্যে ২০১২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই প্রবীণ নিবাসটি গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
২০১৬ সালে স্থানীয় গাবতলা মোড়ের একটি ভাড়া বাসায় মহানন্দা প্রবীণ নিবাসের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আতাহার এলাকার দক্ষিণ শহরে প্রবীণ নিবাসের নিজস্ব-স্থায়ী ঠিকানায় স্থানান্তর করা হয়। সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী ঠিকানার জন্য জমিদান করেন প্রবীণ নিবাসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডা. আনোয়ার জাহিদ রুবেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডা.ময়েজ উদ্দিন ও ডা. আবুল হাসান। প্রবীণ নিবাসের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আব্দুস সালাম ও প্রতিষ্ঠাতা-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গিয়াসুর রহমান মবিন। উল্লেখ্য, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটিকে গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় আরও অনেক ব্যক্তিবর্গের বিভিন্নরকম অবদান রয়েছে।
নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে ২০১৭ সালে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের পালশা গ্রামে ‘হযরত বেলাল (রা.) মসজিদ’ প্রতিষ্ঠা করেন। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের পাশেই অন্ধদের জন্য মাদ্রাসা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন। যার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের প্রত্যন্তাঞ্চলে একটি স্কুল করার উদ্যোগ নেয়া হলে, তিনি সেখানে ১ বিঘা জমিদান করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তিবাগ এলাকায় নিজ বাসভবনে, নিজস্ব অর্থায়নে সম্প্রতি ‘এ্যাঞ্জেল গার্ডেন’ নামে প্রতিবন্ধিদের নিয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবন্ধিদের শিক্ষা, চিকিৎসা, থাকা-খাওয়াসহ সার্বিক সেবা দেওয়া হবে।
‘মেহমান’ নামের একটি মানবিক-সামাজিক উদ্যোগের সাথেও তিনি যুক্ত রয়েছেন। ‘মেহমান’ সংগঠনের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল কেন্দ্রিক অসুস্থ রোগী ও রোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিদিন বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয়। মেহমানের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। রোগী সহায়তা কেন্দ্রের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করে আসছেন। এছাড়াও তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা, অসহায়-দু:স্থ মানুষদের আর্থিকসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে থাকেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির আজীবন সদস্য, সাধারণ পাঠাগারের আজীবন সদস্য, অন্ধ কল্যাণ সমিতির আজীবন সদস্য, নবাবগঞ্জ ক্লাবের আজীবন সদস্য, সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য, আলিয়া মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত রয়েছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}