চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.মমতাজ হোসেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ইসলামপুরে তাঁদের বাড়ির সবাইকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে হানাদার পাকিস্তানি সেনারা বাড়িতে আগুন দেয়। তারপর চলে এলোপাতারি গুলি। নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডে শহীদ হন মমতাজ হোসেন, তাঁর দুই মেয়ে ও আশ্রয় নিতে আসা এক বালক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০২১ সালের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় চিকিৎসক মমতাজ হোসেনের নাম রয়েছে।
অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও শহীদ চিকিৎসক মমতাজ হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে সেই বিভীষিকাময় দিনের স্মৃতি এখনো আতঙ্কিত করে তোলে। এ পৈশাচিক ঘটনায় মমতাজ হোসেনের বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মাহবুবা খাতুন ও আশ্রিত বালক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। স্বামী ও বড় মেয়ের লাশ দাফন করে আহত দুই মেয়ে ও তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়ি গোদাগাড়ীর ডোমকুলি গ্রামে চলে যান। পরদিন ছোট মেয়ে পাঁচ বছরের মাসতুরা খাতুন মারা যায়। শুরু হয় তাঁর কঠিন জীবনসংগ্রাম। বহু কষ্ট করে মেয়ে মাহবুবা খাতুন ও তিন ছেলে জাফর আহমেদ ওসমানী, জাকি আহমেদ ওসমানী (বর্তমানে অষ্ট্রিয়া প্রবাসী) ও জামিল আহমেদ ওসমানীকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করেছেন। তাঁরা সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত।
মমতাজ হোসেন ১৯২৭ সালে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বাসুদেবপুর ইউনিয়নের ডোমকুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ওসমান আলী ও মাতা মরিয়ম বেগম। মমতাজ হোসেন ১৯৫৫ সালের দিকে পরিবার নিয়ে পেশাগত প্রয়োজনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ইসলামপুর মহল্লায় স্থায়ী হোন। সেই সময় বহুদিন এলাকাবাসীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের সেবা করাই তাঁর একমাত্র পেশা এবং লক্ষ্য ছিল। এখনও তাঁর পরিবারের অনেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}