চাঁপাইনবাবগঞ্জ গ্রিন সিটির স্বপ্নদ্রষ্টা, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দক্ষ কারিগর, জনবান্ধব-জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক প্রয়াত জাহিদুল ইসলাম ১৯৬৮ সালের ২৫ এপ্রিল গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শুকতাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।চাঁপাইনবাবগঞ্জে না জন্মালেও যে সকল ব্যক্তির চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান-অর্জন ও কৃতিত্ব রয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রয়াত জাহিদুল ইসলাম।তাঁর পিতার নাম সায়েদুল হক মোল্লা।পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পিতা-মাতার জ্যোষ্ঠ সন্তান। দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক জাহিদুল ইসলামের স্ত্রীর নাম রহিমা ইসলাম। তাঁর বড় মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম মীম ঢাকা গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজর এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী। ছোট মেয়ে ফাহেমা-তুজ-জোহরা এস.এস.সি পরীক্ষার্থী ও মোহম্মদ ইয়াছিন তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
১৯৯৪ সালের এপ্রিলে ত্রয়োদশ বিসিএসের (প্রশাসন) মাধ্যমে জাহিদুল ইসলাম কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর পিরোজপুরের ভারিয়া, ঝিনাইদহের মহেশপুর, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও বাগেরহাটের কচুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। জাহিদুল ইসলাম খুলনার এডিসি ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন। ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন এবং মৃত্যুঅবধি অত্যন্ত সফলতার সাথে এ দায়িত্ব পালন করেন।
শিল্প, সাহিত্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিকাশসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন প্রয়াত জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম। যোগদানের পর থেকেই তিনি তাঁর দপ্তর ঢেলে সাজান। দুর্নীতি মুক্ত করতে সিসিটিভি সংযুক্ত করেন এবং ডিজিটাল হাজিরা ব্যবস্থা চালু করেন। সম্প্রতি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আধুনিক জেলা গঠনের লক্ষ্যে ‘সবুজ জেলা/গ্রিন সিটি করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। জেলা প্রবেশ মুখে ‘আম চত্বর’সহ আরো অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথাও বলেন তিনি। এছাড়াও তিনি বাবুডাইংয়ে পিকনিক স্পট-পর্যটন কেন্দ্র, আজাইপুর বিলকে ডিসি লেক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
আজ তাঁর প্রথম প্রয়াণ দিবস। গত বছরের এই দিনে (১৭.১০.২০১৬ইং) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দায়িত্বকালীন অবস্থায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার অফিসে বিভাগীয় টাস্ক ফোর্স কমিটির সভায় অংশগ্রহণ করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সহকর্মীরা তাঁকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে ১০টায় মৃত্যুবরণ করেন জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় ফকিরপাড়া ঈদগাহ মাঠে তাঁর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। প্রিয় এই জেলা প্রশাসককে সেদিন শ্রদ্ধা জানানোর জন্য হাজারো মানুষ ভীড় জমায়। পরবর্তীতে জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলার শুকতাইল গ্রামে তাঁকে দাফন করা হয়। { অসমাপ্ত…/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য মূল গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী) }