দেশের অন্যতম শিল্প ইন্ডাস্ট্রি, দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ড ‘ওয়ালটন গ্রুপ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)- ‘গোলাম মুর্শেদ সাগর’ চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মিস্ত্রীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কর্মসূত্রে থাকেন ঢাকায়। তাঁর পিতা মনিরুল ইসলাম বাদল চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ী।
ছোটবেলা থেকেই গোলাম মুর্শেদ অত্যন্ত মেধাবী। চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ঢাকার ইসলামিক ইউভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে সেরা সিজিপিএ-সহ স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রী লাভ করেন।
কোঅর্পোরেট লিডার হিসেবে দেশব্যাপি পরিচিতি লাভ করেছেন। ২০১০ সালে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় তিনি ওয়ালটন কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ওয়ালটন কোম্পানির এত দ্রুত উন্নতির পেছনে তাঁর অবদান অপরিসীম। বর্তমানে তিনি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ওয়ালটন কোম্পানি এবং ব্যক্তি গোলাম মুর্শেদের অর্জন যেন একই সূত্রে গাঁথা! ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে রেফ্রিজারেটরের দ্বিগুণ উৎপাদন তাঁর প্রথম অর্জন। ভিয়েতনাম, তাইওয়ান এবং চীন থেকে রেফ্রিজারেটর এবং এসি ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টস আমদানি করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। মুর্শেদ সংশ্লিষ্ট বিভাগের দ্বায়িত্বে থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ রেফ্রিজারেটর বিক্রি করে ওয়ালটন কোম্পানি। সম্প্রতি করোনা মহামারিতে ওয়ালটনের তৈরি ভেন্টিলেটর, পিপিই, জীবাণুনাশক, দ্রুত সাড়া প্রদানে সক্ষম মেডি-কার্ট রোবট ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল সামগ্রী উৎপাদনের উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পুঁজি বাজারে যে ‘আইপিও শেয়ার’ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো তা মূলত গোলাম মুর্শেদের হাত ধরেই। তাঁর নেতৃত্বে কোম্পানিটি ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। ওয়ালটন কোম্পানিকে ‘গো গ্লোবাল’ নামক প্রজেক্টের সাথে পরিচয় করান তিনি। এই প্রজেক্ট অনুযায়ী তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়ালটনকে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানির একটিতে পরিণত করার দৃঢ় প্রকল্প ব্যক্ত করেন।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে আসছেন। ওয়ালটন কোম্পানীসহ বিভিন্নভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বহু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে বহু মানুষকে খাদ্য-আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা গানের বিভিন্ন দলকে নানাসময়ে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজসহ সাংস্কৃতিক কাজ ও খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতি, ঢাকার সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সদস্য, বাংলাদেশ রেফ্রিজারেটর মেনুফেকচারস এ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ ওনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সদস্য, কম্পিউটার এ্যান্ড মোবাইল মেনুফেকচারস এ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য, বাংলাদেশ-জাপান চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য, বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্যসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালে ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতি থেকে গুণীজন সম্মাননা পেয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান থেকে সংবর্ধিত হয়েছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড) লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}