তরুণ ব্যবসায়ী নেতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির ৯ বারের সভাপতি, সমাজসেবী- ‘আব্দুল ওয়াহেদ’ ১৯৬৬ সালের ২ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পাঠানপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সেরাজ উদ্দীন সেখ ছিলেন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। তাঁর দাদা আনিস মোহাম্মদ সেখও ছিলেন ব্যবসায়ী। পারিবারিকভাবেই তাঁরা কয়েকপুরুষ যাবৎ সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছেন।
নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে থেকে এইচ.এস.সি পাস করার পরে বাবার মৃত্যুর কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি তাঁকে বাবার রেখে যাওয়া ব্যবসা-বাণিজ্যের হাল ধরতে হয় । বহু বছর ধরে তিনি শহরের বৃহত্তম casino dinheiro gratis পরিচালনা করেছেন।
স্কুল-কলেজ জীবনে তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন। ছাত্রনেতা হিসেবে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই সময়ে রাজনৈতিক মামলার কারণে অনেকদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য নির্বাচিত হোন। বিভিন্ন সময় তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর, থানা ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
একসময় সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসে ব্যবসায় মনোযোগী হোন। আব্দুল ওয়াহেদ কোয়ালিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোয়ালিটি এন্টারপ্রাইজ, মহানন্দা মানি চেঞ্জিং, কোয়ালিটি ওভারসীজ, সিরাজ ড্রীম ট্রাভেল্স, আমদানী, রপ্তানী, কন্সট্রাকশন ট্রেডিং, মোবাইল ব্যাংকিংসহ নানামুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। ঢাকায় এফ.বি.সি.সি.আই এর পরিচালক থাকার সুবাদে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেকার যুবকদের বিভিন্ন যায়গায় চাকুরী দিতে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করেছেন।
১৯৯১ সালে ‘দি চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির’ সভাপতি নির্বাচিত হোন। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৯ বার চেম্বারের সভাপতি নির্বাচিত হোন। দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফ.বি.সি.সি.আই এর পরিচালক হিসেবে এ পর্যন্ত ৬ বার নির্বাচিত হোন।
তাঁর প্রচেষ্টায় ২০০৪ সালে জেলায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ‘দি চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির’ চেম্বার ভবনের জমি ক্রয় করা হয়। সভাপতি থাকাকালীন সময়ে আধুনিক চেম্বার ভবন (৪ তলা বিশিষ্ট) নির্মাণ করে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ীদের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
দেশের আম চাষী ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করার জন্য তিনি ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্টস্ এ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিসহ ৬ বার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় পর্যায়ে আম শিল্পে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
সমাজসেবী হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। ১৯৯৩ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি ও ডায়াবেটিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা-পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী সদস্য ছিলেন। ২০০১ সাল থেকে অদ্যাবধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ডায়াবেটিক সমিতির (বারডেম) সর্বোচ্চ কমিটি ন্যাশনাল কাউন্সিলের ৪ বার সদস্য নির্বাচিত হোন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি, নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, রেডক্রিসেন্টের নির্বাহী সদস্য, রাইফেল্স ক্লাব, সাধারণ পাঠাগার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সেন্ট্রাল জামে মসজিদ ও মাদ্রাসার উপদেষ্টা, মুক্তমহাদল, উত্তরায়ন সাংস্কৃতিক পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০৬ সাল হতে ‘ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির’ প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং পরবর্তীতে দুই মেয়াদ কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি ২০০০ সালে দক্ষিণ পূর্ণ এশিয়ার ৭টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ‘সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির’ তিন মেয়াদের নির্বাহী সদস্য এবং এফ.বি.সি.সি.আই এর তিন মেয়াদ সালিশী ট্রাইব্যুনাল বোর্ডের সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন।
২০০১ সাল হতে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ‘বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের’ বেসরকারি পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নর্থ ওয়েষ্ট বিদ্যুৎ কোম্পানীর’ প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। সরকার কর্তৃক ২০১৪ সালে তিনি সি.আই.পি নির্বাচিত হয়ে সম্মাননা প্রাপ্ত হোন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে দীর্ঘ করদাতা এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে সর্বোচ্চ করদাতা হিসাবে সম্মাননাপ্রাপ্ত হোন। চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সারা দেশে তিনি ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী)}