বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবী ‘ডা.আবুল হাসান’ ১৯৪৫ সালের ২৭ আগষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশঙ্করবাটি-নয়ানশুকা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা তমিজ উদ্দিন আহমেদ একজন সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব।
আবুল হাসান ১৯৭২ সালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাস করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকুরিতে কয়েকবছর কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি বিদেশে (লিবিয়া) চলে যান এবং সেখানকার হেলথ সেন্টারে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে আবারও দেশে ফিরেন। এলাকার মানুষদের বিনামূল্যে/স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে শুরু করেন।
স্ব-উদ্যোগী হয়ে, স্থানীয় আরও কিছু চিকিৎসকদের (ডা.ময়েজ উদ্দিন, ডা.এমদাদুল হক, ডা.আনোয়ার জাহিদ রুবেন) সাথে নিয়ে ১৯৮৮ সালে তিনি সেবা ক্লিনিক (চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রথম আধুনিক বেসরকারি হাসপাতাল) প্রতিষ্ঠা করেন। সেবা ক্লিনিকের অফিসিয়াল কার্যক্রম প্রথম শুরু হয় তাঁর নিজস্ব বাড়ি থেকে (চাঁপাইনবাবগঞ্জের ডিসি মার্কেটের সামনে)। মূলত সেবা ক্লিনিকের পরিচালনা ও প্রশাসনিক দিকটায় বেশি দেখেন ডা. আবুল হাসান। সুনামের সাথে সেবা ক্লিনিকের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিকিৎসাসেবা দিয়ে চলেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নয়ানশুকা আর.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের ‘মঞ্জুর আহমেদ মেমোরিয়াল ভবন’ নির্মাণে পারিবারিকভাবে অবদান রাখেন, আর্থিক সহযোগিতা করেন। স্মৃতি রক্ষার্থে বড় ভাইয়ের নামানুসারে ভবনটি নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি করেন। এছাড়াও, সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে-অর্থায়নে নয়ানশুকা আর.কে উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন সমাজসেবী ডা.আবুল হাসান। উল্লেখ্য, নয়ানশুকা রশিদা খানম (আর.কে) উচ্চ বিদ্যালয়টি তাঁর বাবা তমিজ উদ্দিন প্রতিষ্ঠা করেন। ডা.আবুল হাসানের মায়ের নামানুসারে স্কুলটির নামকরণ করা হয়।
দানশীল, সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত দান-অনুদান দিয়ে থাকেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ গ্রীণভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের ‘তোহুর ভবন’ নির্মাণে পারিবারিকভাবে অবদান রাখেন। স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর ভাই তোহুর আহমেদের নামে ভবনটির নামকরণ করা হয়। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রবীণ নিবাস’ এর স্থায়ী অফিসের অনুকূলে অন্যান্য চিকিৎকদের (ডা.ময়েজ উদ্দিন, ডা.আনোয়ার জাহিদ রুবেন) সাথে তিনিও জমিদান করেছেন। নামোশঙ্করবাটি এতিমখানায় জমিদানসহ পারিবারিকভাবে অবদান রেখেছেন। নয়ানশুকা গোরস্থানে জমিদান করেছেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে এলাকার বহু মানুষকে খাদ্য-আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। দীর্ঘদিন নয়ানশুকা আর.কে উচ্চ বিদ্যালয়ে চক্ষু শিবির পরিচালনা করাসহ সমাজ উন্নয়নে নানামুখী অবদান রাখছেন।
নামোশঙ্করবাটি হেফজুল উলুম ফাইজা খানম কামিল মাদ্রাসায় পারিবারিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন। সেই মাদ্রাসার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির দাতা সদস্য, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ অন্ধকল্যাণ সমিতির আজীবন সদস্য, সাধারণ পাঠাগারের সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাবের সদস্য, নামোশঙ্করবাটি ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য, শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের গভর্নিং বডিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}