ইলিয়াস উদ্দীন বিশ্বাস

Spread the love

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (সিলেট) এর ভাইস চ্যান্সেলর- ‘প্রফেসর ড. ইলিয়াস উদ্দীন বিশ্বাস’। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকবার ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের (ভাইস চ্যান্সেলর) দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৬৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন রাজশাহী জেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহকুমার সদর থানার অন্তর্গত চরকাশিমপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা তৈমুর রহমান বিশ্বাস এবং মাতা জুমরুতুন নেসা।
গোদাগাড়ী উপজেলার কাশিমপুর এ.কে ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে এস.এস.সি এবং ১৯৮২ সালে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন। রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয় থেকে গণিতে (১ম শ্রেণী) ১৯৮৫ সালে অনার্স ও ১৯৮৬ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৮ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে সিলেটের শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে তিনি প্রফেসর পদে এবং ২০১৭ সালে গ্রেড-১ প্রফেসর উন্নীত হোন। ড. মো. ইলিয়াস উদ্দীন বিশ্বাস ২০১০ সালের ১০ই জুন থেকে ২০১৪ সালের ৯ জুন এবং ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত দুই মেয়াদে মোট ৮ বছর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কোষাধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন মেয়াদে শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যেরও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা এবং আবাসিক হলের এ্যাসিসটেন্ট প্রভোস্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০০ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স’ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন। দুই বছর পর পর এই ধরনের আরও দুটি কনফারেন্স আয়োজনে তিনি প্রথমবার কোষাধ্যক্ষ ও দ্বিতীয়বার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০০১ সালে বিটিভি আয়োজিত প্রাণতরঙ্গ অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী ছিলেন। এই অনুষ্ঠানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালেয়ের ছাত্রছাত্রীদের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হতো। তিনি ২০০২ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জাতীয় পর্যায়ে গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজনের জন্য গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। আর সে থেকেই দেশে গণিত অলিম্পিয়াডের যাত্রা শুরু। জাতীয় পর্যায়ে গণিত অলিম্পিয়াড প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশে ভাইস চ্যান্সেলর (উপাচার্য) হিসেবে ১২ জানুয়ারী, ২০২১ তারিখে যোগদান করে অদ্যাবধি সুনাম এবং সাফল্যের সাথে তিনি দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
গণিতবিদ অধ্যাপক ইলিয়াস উদ্দীন বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত রয়েছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সিলেটস্থ রাজশাহী বিভাগীয় সমিতির প্রধান উপদেষ্টা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাথমেটিক্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি। এছাড়া ২০০০ সালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিক্ষকতা ছাড়াও লেখক হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিনি নিয়মিত কলাম লিখে থাকেন। বিষয়ভিত্তিক ১৫টি মৌলিক গবেষণা প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর ৫০ টিরও অধিক প্রবন্ধ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কয়েকটি মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ১. গণিত উৎসবের প্রশ্নোত্তর ২. শ্রীজল (উপন্যাস) ৩. অন্যরকম অভিযান (উপন্যাস) ৪. নিরুদ্দেশ (ছোট গল্প) ৫. ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ (প্রবন্ধ সংকলন) ৬. ভাষা সৈনিক থেকে রাষ্ট্রনায়ক (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম,তাজ উদ্দিন আহমেদ, বিচারপতি হাবিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান)। ২০২১ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘নক্ষত্রের অক্ষরে রচিত’ স্মারকগ্রন্থের সম্পাদনা পর্ষদের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ড.ইলিয়াস উদ্দীন বিশ্বাস। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}