সৌদামিনী সাহা

দানশীল-সমাজসেবী, আলোকিত মানুষ ‘সৌদামিনী দাসী ওরফে সৌদামিনী সাহা’ ১৮৬০ সালে তৎকালীন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভোগরোথপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জের হুজরাপুরে তাঁর ছিল শ্বশুরবাড়ি। তাঁর স্বামী আশুতোষ সাহা ছিলেন সেই সময়ের বিশাল যায়গা-জমি, সম্পত্তির মালিক। মাত্র সাত বছর বয়সে ‘সৌদামিনী দাসী’ শিশু বধু হিসেবে শ্বশুরালয়ে ‘সৌদামিনী সাহা’ হয়ে পদার্পণ করেন। সৌদামিনী সাহা ছিলেন ১৯ জন সন্তানের মাতা। এর মধ্যে ৮ জন জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই মারা যান। বাকী ৭ ছেলে ও ৪ মেয়ে পূর্ণাঙ্গ জীবন লাভ করেন। সর্বকনিষ্ঠ সন্তান খগেন্দ্রনাথ সাহাকে নিয়ে যখন ৩ মাসের অন্তসত্ত্বা, তখন সৌদামিনীর স্বামী আশুতোষ সাহা প্রয়াত হন।

সৌদামিনী সাহা ছিলেন শিক্ষানুরাগী, দানশীল-সমাজসেবী, জনদরদী মানুষ। স্বামী আশুতোষ সাহার সমস্ত সম্পত্তি ছিল সৌদামিনীর নামে। যা তিনি অকাতরে দান করেছিলেন বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে। সৌদামিনী সাহার মারা যাবার পর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পত্তি দান করেন। তাঁদের দানকৃত জমির মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাধারণ পাঠাগার, নবাবগঞ্জ ক্লাব ও নবাবগঞ্জ ক্লাব সুপার মার্কেট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত মহাদল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য (সম্পত্তি দান পরবর্তী সময়ে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে)।

১৯৯৯ সালের ১৬ এপ্রিল খগেন্দ্রনাথ সাহার মৃত্যুর পর সৌদামিনী সাহার বংশের প্রদীপ জ্বেলে রেখেছিলেন তাঁর একমাত্র নাতী শ্রী হীতেন্দ্রনাথ সাহা, যিনি ইশ্বরদী সরকারি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা থেকে ২০০৩ সালে সৌদামিনী সাহাকে মরণোত্তর ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা শতবর্ষ পূর্তি উৎসব সম্মাননা’ প্রদান করা হয়। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}