রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘সৈয়দ আলী হোসেন’ ১৯৪৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার জালমাছমারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ কশিমুদ্দিন ও মাতা সৈয়দা গুলনাহার বেগম।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শিবগঞ্জ উপজেলাকে শত্রুমুক্ত করতে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন ‘সৈয়দ আলী হোসেন’। ভারতের শিলিগুড়ির পানিঘাটায় প্রশিক্ষণ নেন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসিজদ, তেলকুপি, দুর্লভপুর, আড়গাড়া ও মনাকষা এলাকায় পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী হোসেন যুদ্ধ ময়দানে অন্তত ৬ বার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসেন। সেই সময়ে তাঁর সহযোদ্ধা ছিলেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী (সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ)।
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও ৭ নং সেক্টর কমান্ডার নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শত্রুমুক্ত করতে তাঁরা যুদ্ধ করেন। ১০ ডিসেম্বর শিবগঞ্জে তিনিসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করেন। ১৪ ডিসেম্বর শত্রু সেনার গুলিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর শহীদ হোন। ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত এবং ১৫ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
সৈয়দ আলী হোসেন রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি লালমনিরহাট জেলার একটি বেসরকারি সংস্থায় ২২ বছর চাকুরি করেন। পাশাপাশি ১৯৮৪ সাল থেকে কয়েক বছর দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় পত্রিকা ‘দৈনিক কালের কন্ঠ’ থেকে তিনি সম্মাননা পেয়েছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলামের তিনি বড় ভাই। তাঁর এক মেয়ে ক্যাডার সার্ভিসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এবং আরেক মেয়ে প্রশাসন ক্যাডারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদে চাকুরিরত। ২০২১ সালের ৮ জুন মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}