‘শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ’ একজন বিশিষ্ট আলেম, ইসলামী চিন্তাবিদ-লেখক, শিক্ষক ও সমাজসেবী। ১৯৬০ সালে চাঁপাইনবাবগ ঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের মাওলা বক্স হাজীরটলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামী বক্তা হিসেবেও ‘শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ’ এর দেশব্যাপি পরিচিতি রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দেবীনগর এলাকার মক্তবে শিক্ষা জীবনের হাতে খড়ি নেন, পরবর্তীতে তিনি নাচোল মাদ্রাসা থেকে হাদীসের অন্যতম কিতাব মিশকাত শরীফ পর্যন্ত পড়েন। তিনি ভারত থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। ভারতের উত্তর প্রদেশের দারুল উলুম মউনাথভাঞ্জ থেকে দুই বার দাওরা হাদীস শেষ করেন। দেশে ফিরে কর্মজীবনের পাশাপাশি ফাজিল ও কামিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি হাদীস ও তাফসীর নিয়ে ১ম বিভাগে কামিল পাস করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন গাইবান্ধা জেলার আল মারাকাজুল ইসলামী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে অদ্যাবধি আল মারকাজুল ইসলামী আস সালাফী মাদ্রাসায় (নওদাপাড়া, রাজশাহী) একজন মুহাদ্দিস হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি অত্র মাদ্রাসায় প্রায় ৫ বছর প্রধান শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এই পাঁচ বছরে মাদ্রাসার উন্নতি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এছাড়া তিনি মাসিক আত তাহরিক পত্রিকার ফতোয়া বোর্ডের একজন সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি আল জামিয়াতুস সালাফিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান ও পরিচালনা করছেন।
ছাত্রজীবন থেকে ইসলামী বক্তা হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। বক্তব্যের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রাখছেন। বাংলা ভাষাভাষী আলেমদের মধ্যে একজন সর্বজন বিদিত বক্তা হিসেবে তিনি স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামিক স্কলার ডা. জাকির নায়েকের পীস টিভিতে তিনি নিয়মিত লেকচার দিয়ে থাকেন। সউদী আরব, দুবাই, ভারত ও মালদ্বীপ বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর বক্তব্যের আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তিনি হাদীসের আরবী ইবারাত মুখস্থ পড়েন এবং তারপর অনুবাদ করেন। তাঁর প্রায় দুই আড়াই হাজার হাদীস মুখস্থ রয়েছে। একেক বিষয়ের উপর তিনি দীর্ঘ দুই তিন ঘণ্টা বক্তব্য দিতে পারেন।
ইসলামী চিন্তাবিদ-লেখক আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর প্রকাশিত ইসলাম বিষয়ক গ্রন্থের সংখ্যা ১০টি । শায়খ মুজাফফর বিন মুহসিন, শায়খ ইমামুদ্দিন বিন আব্দুল বাসির, শায়খ নুরুল ইসলাম, শায়খ আবু তাহের, শায়খ আব্দুল মাতীন মাদানী, শায়খ শরীফুল ইসলাম মাদানীসহ তাঁর হাতে গড়া অনেক ছাত্র আজ আলেম, ওলামা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
সমাজসেবী `আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ’ ইসলামী শিক্ষাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে, দেশের বিভিন্ন জেলায় ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এলাকার মানুষদের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জে গড়ে তুলেছেন আল জামিয়াতুস সালাফিয়া, বগুড়া জেলার আটমলে আল মাদ্রাসাতু স সালাফিয়া এবং বীর কুস্টিয়া দারুল হাদীস সালাফিয়া মাদ্রাসা রাজশাহী জেলায় গড়ে তুলেছেন আল মারকাজুল ইসলামী আস সালাফী এবং মহিলা সালাফিয়া মাদ্রাসা প্রভৃতি। দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-গাইবান্ধা তথা উত্তরবঙ্গের মানুষের কল্যাণে তিনি নানামুখী ধর্মীয় ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
তাঁর সুযোগ্য পুত্র ‘ শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক’ তরুণ ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক-লেখক ও সুবক্তা হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছেন। ‘আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক’ কুরআন ও হাদীছের উচ্চতর জ্ঞান অর্জন করেছেন দারুল উলূম দেওবান্দ, ভারত ও মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব থেকে। কুরআন মাজীদ হিফয সম্পন্ন করেছেন গিলেটবাজার মাদরাসা বানারস থেকে। বর্তমানে তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীছ ডিপার্টমেন্টের উলূমুল হাদীছ বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। { অসমাপ্ত…/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ১ম ও ২য় খণ্ড) লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}