মোহাম্মদ জাকারিয়া’ একজন উদ্ধর্তন ব্যাংক কর্মকর্তা, সাবেক ছাত্রনেতা ও লেখক। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর গ্রামে ১৯৫৪ সালের ২৭ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং আদিনা ফজলুল হক কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
কলেজ জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ এলাকায় তরুণ সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শিবগঞ্জ আদিনা ফজলুল হক কলেজের নির্বাচিত জেনারেল সেক্রেটারী (জিএস)- এর দায়িত্ব পালন করেন সেই সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা ‘মোহাম্মদ জাকারিয়া’। ১৯৭৩ সালে ছিলেন শিবগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর রাজরোষের শিকার হয়ে গ্রেফতার এড়িয়ে চলে আসেন ঢাকায়। ১৯৭৬ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন এবং সেসময় ঢাকাসহ নিজ এলাকায় ছাত্রলীগের পুনর্গঠনে কাজ করেন। এক সময়ের ডাকসাইটে ছাত্রনেতা সরকারি চাকুরীতে যোগদান করে নিভৃতে চলে যান। তবে ব্যাংকের পেশাজীবি সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকেন এবং ব্যাংক বিরাষ্ট্রীয়করণবিরোধী আন্দোলনসহ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন।
‘মোহাম্মদ জাকারিয়া ৮০ সালে অফিসার পদে অগ্রণী ব্যাংকে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। শাখাপ্রধান, অঞ্চলপ্রধান, সার্কেলপ্রধান, বিভাগীয়প্রধান ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ৩১ বছর সরকারি চাকুরীজীবন শেষে ২০১১ সালে অগ্রণী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। অত:পর ২০১২ সালে দেশের অন্যতম বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে হেড অব ট্রেনিং হিসেবে যোগ দেন ও সাত বছর দায়িত্ব পালন করেন। দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে তিনি একজন নিয়মিত রিসোর্স পারসন। বর্তমানে তিনি অগ্রণী ব্যাংক রিটায়ার্ড ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি-সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত। ব্যাংকিং বিষয়ের উপর লেখা তাঁর কয়েকটি বই ও প্রবন্ধ রয়েছে। প্রত্যক্ষ রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেন মনেপ্রাণে। সাহিত্যপ্রীতি, সমাজ-চেতনা, বিজ্ঞান-মনস্কতা, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ, অর্থ ও ব্যাংকিং প্রভৃতি বিষয়ে তিনি লেখালেখি করে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রকাশিত তাঁর বই ‘মহামানবের ডাক শুনি’ তথ্যসমৃদ্ধ ও পাঠকনন্দিত। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}