বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবী, করোনাকালের অন্যতম ফ্রন্ট লাইনার- ডা.মো.দুররুল হোদা ১৯৬৪ সালের ১ জানুয়ারী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশঙ্করবাটি মন্ডলপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা লোকমান আলী এবং মাতা জাহানারা বেগম।
দুররুল হোদা ১৯৭৯ সালে নবাবগঞ্জ হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, ১৯৮১ সালে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এম.বি.বি.এস ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে বোষ্টন আমেরিকা থেকে এ্যাডভ্যাসমেন্ট এ্যান্ড ইনোভেশন ইন ডায়াবেটিক এবং ফেলো চাইল্ড নিউট্রিশনসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিশু রোগ ও ডায়াবেটিকের উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
ডায়াবেটিক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমেরিকান ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন এবং ইউরোপিয়ান ডায়াবেটিক এ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে থাইল্যান্ড, মালেশিয়া, চীন, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডায়াবেটিকের উপর পিএইচডি কোর্সে গবেষণারত রয়েছেন বিশিষ্ট ডায়াবেটিক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দুররুল হোদা।
এমবিবিএস পাস করার পর থেকে অদ্যাবধি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নতুনহাটে অসহায় ও দরীদ্র মানুষদের স্বল্পমূল্যে-বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার মানুষদের সুচিকিৎসার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহরে ২০০৬ সালে নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন গৌড় ক্লিনিক (ডায়াগনষ্টিক)।
শুধু চিকিৎসক নয়, সমাজসেবী হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা-পরিচালনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন (১৯৯৩) সময় থেকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল পর্যন্ত অদ্যাবধি চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাকালীন চিকিৎসক ডা. দুররুল হোদা বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালের পরিচালক এবং ডায়াবেটিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠার সময় থেকে পূর্ণাঙ্গ চক্ষু হাসপাতাল পর্যন্ত তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ অন্ধ কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অন্ধ বধিরদের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- হাই কেয়ার স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যকরী কমিটির সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশঙ্করবাটি ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন গভর্নিং বর্ডির সদস্য, নামোশঙ্করবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি, নামোশঙ্করবাটি হেফজুল উলুম কার্যকরী কমিটির সদস্য, জেলা দুর্নীতি দমন কমিটির সদস্য, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্য, জেলা কারাগার পরিদর্শক কমিটির সদস্য, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করেন।
চিকিৎসা ও সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি রাজনীতির সাথেও যুক্ত রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার অন্যতম সদস্য ডা. দুররুল হোদা বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
দীর্ঘদিন তিনি চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন- বিএমএ ও স্বাচিপে নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বি.এম.এ), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতির আজীবন সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাধারণ পাঠাগারের আজীবন সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য, নবাবগঞ্জ ক্লাবের সদস্য, শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজ গভর্নিং বোর্ডির সদস্য, ফকিরপাড়া জামে মসজিদের সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত রয়েছেন।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ডা. দুররুল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিট স্থাপন, চিকিৎসক ও প্রশাসনের মাঝে সমন্বয় স্থাপন, করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা, অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ, অক্সিজেন প্ল্যান্ট, টিকাদান কর্মসূচি প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী)}