গোলাম ফারুক রুমী

স্বনামধন্য বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ঠাকুরগাঁও)-‘মো. গোলাম ফারুক রুমী’ ১৯৬৬ সালের ২ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণগোবিন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত গোলাম ইয়াজদানী মিয়া ছিলেন শিক্ষক ও সমাজসেবী ব্যক্তিত্ব।

গোলাম ফারুক রুমী ১৯৮২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষ্ণগোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ হতে ১৯৮৪ সালে এইচ.এস.সি পাস করেন। রাজশাহী কলেজ হতে ১৯৮৭ সালে অর্থনীতিতে অনার্স এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৮৮ সালে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজশাহী আইন কলেজ থেকে এল.এল.বি ডিগ্রী লাভ করেন।

কর্মজীবনের শুরুতে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থায় কয়েকবছর চাকুরী করলেও ১৯৯৬ সালে তিনি সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা কোষে-‘গবেষণা কর্মকর্তা’ হিসেবে সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে থানা শিক্ষা অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করলে, ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা জেলার মীরপুর থানায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৮তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে ‘সহকারী জজ’ হিসেবে নাটোর জেলা জজ কোর্টে যোগদান করেন। একই পদে সিরাজগঞ্জ জেলা জজ কোর্টেও কর্মরত ছিলেন। ২০০৪ সালে জুলাই মাসে ‘সিনিয়র সহকারী জজ’ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করে রাজশাহী ও নেত্রকোনায় দায়িত্ব পালন করেন।

বিচারবিভাগ পৃথকিকরণের পর ২০০৭ সালে ‘মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট’ হিসেবে চট্টগ্রামে বদলী হন। আগষ্ট, ২০০৮ সালে ‘যুগ্ম জেলা জজ’ হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রাম ও ঢাকায় দায়িত্ব পালন করেন। ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে ‘অতিরিক্ত জেলা জজ’ হিসেবে পদোন্নতি নিয়ে বগুড়া জেলা জজ কোর্টে যোগদান করেন। অত:পর ‘চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম)’ হিসেবে বরিশালে দায়িত্ব পালন করেন। সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে ‘জেলা ও দায়রা জজ’ হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হোন। বর্তমানে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ঠাকুরগাঁও-এ কর্মরত রয়েছেন।

সততা-নিষ্ঠা ও যোগ্যতার সাথে তিনি বাংলাদেশ বিচার বিভাগের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। পরিশ্রমী ও কর্মঠ বিচারক হিসেবে গোলাম ফারুক রুমীর সুনাম রয়েছে। রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও প্রভৃতি জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচার পরিচালনাসহ রাষ্ট্রীয় বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচারকাজ পরিচালনার অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে।

সরকারি চাকুরীর পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। ২০০১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষ্ণগোবিন্দপুর এলাকায় ‘শিশুমেলা’ কিন্ডারগার্ডেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি ৬নং রাণীহাটী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সাধারণ পাঠাগারের উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ অন্ধকল্যাণ সমিতির আজীবন সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রবীণ নিবাস (বৃদ্ধাশ্রম) এর আজীবন সদস্য, রামচন্দ্রপুরস্থ উঠান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টাসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত রয়েছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষ্ণগোবিন্দপুর এলাকার সাহিত্যপ্রেমীদের নিয়ে ১৯৮৭ সালে ‘আ¤্রকানন সাহিত্য পরিষদ’ গড়ে তোলেন এবং প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আ¤্রকানন সাহিত্য পরিষদ থেকে তাঁর সম্পাদনায় ‘নির্ঝর’ নামে কবিতা সংলকলন প্রকাশিত হয়।

তিনি আব্দুল আজিজ চৌধুরী ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী। উক্ত ওয়াকফ এস্টেটের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিভিন্ন ধর্মীয় দিবস উদযাপন, শীতবস্ত্র বিতরণ, খাদ্য বিতরণ, বৃক্ষ রোপন, করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন সহযোগিতা প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক কাজ তিনি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-১ম ও ২য় খণ্ড), লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}