‘ইসরাইল সেন্টু’ একজন বিশিষ্ট ক্রীড়া ও শিশু সংগঠক, রাজনীতিক-সমাজসেবী, সজ্জ্বন ব্যক্তিত্ব। একজন পরিচ্ছন্ন, প্রগতিশীল, সংস্কৃতিবান, সমাজসেবী, সৎ-আদর্শবান মানুষ হিসেবে তিনি জেলায় সুপরিচিত। তিনি আমার বাবা। তাঁর সন্তান হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হয়। তিনিসহ পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।
বহুমাত্রিক কর্মজীবনে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনীতি, ক্রীড়াঙ্গনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অবদান রেখে চলেছেন। প্রথম কর্মজীবনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকুরিও করেছেন কয়েকবছর। সাংবাদিকতাও করেছেন।
শিশু-কিশোরদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে,’ ১৯৯৫ সালে ‘মনীষা কিন্ডার গার্ডেন’ নামে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুদের ‘কিন্ডার গার্ডেন/কে.জি স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। উল্লেখ্য যে, মনীষা কিন্ডার গার্ডেনের পথ অনুসরণ করে পরবর্তীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা স্বুল, হলি চাইল্ড কিন্ডার গার্ডেন প্রভৃতি কে.জি স্কুলসমূহ গড়ে উঠতে শুরু করে।
বায়োকেমিক চিকিৎসক হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে। নাটোর হোমিওপ্যাথি কলেজ থেকে ডি.এইচ.এম.এস কোর্স পড়াশুনা শেষে ১৯৯৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সর্বপ্রথম ‘বায়োকেমিক চিকিৎসালয়’ গড়ে তোলেন। ‘টিসু-রিমেডিজ’ নামের একটি ডিসপেন্সারী-চিকিৎসালয়ে, স্বল্পমূল্যে জটিল রোগসহ গরীব-অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে তিনি চিকিৎসা প্রদান করতেন। পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ার মাহতাব উদ্দিন প্রকাশিত এবং সম্পাদিত, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একসময়ের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘গৌড় সংবাদ’ এর প্রতিষ্ঠাতা-নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।
ফুটবল ও ক্রিকেটের কোচ ছিলেন। নিজেও ভালো ফুটবল খেলতেন। রেফারিও ছিলেন ১ম শ্রেণীর। নিজ হাতে অসংখ্য ফুটবলার ও ক্রিকেটার গড়ে তুলেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রগতিশীল-মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জেনারেশন গড়তে ইসরাইল সেন্টুর অবদান রয়েছে।
সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলোকিত এই মানুষটি ১৯৪৯ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কালীতলা মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খাজা আহম্মেদ বিশ্বাস (খাজা পন্ডিত নামে অধিক পরিচিত) ছিলেন অত্র এলাকার ধমীয়, পরহেজগার ব্যক্তিত্ব। জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’ ও জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর আসর’ আন্দোলনসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল প্রগতিশীল, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন ইসরাইল সেন্টু। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ছাত্রনেতা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং পরবর্তী সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
শিশু-কিশোরদের অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলার লক্ষ্যে, ১৯৭৩ সাল থেকে অদ্যাবধি তিনি জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘরের’ চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা, ‘আমপাতা খেলাঘর আসরের উপদেষ্টাসহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি বিয়ে করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বড়গাছী এলাকার সম্ভ্রান্ত জমিদার, সংস্কৃতিনুরাগী, সমাজসেবী- ‘ শাহ কাদের বক্স মিঞা’ এর জ্যেষ্ঠ কন্যা, বিশিষ্ট শিশু ও সাংস্কৃতিক সংগঠক, শিক্ষক, নারী জাগরণের অগ্রদূত, আলোকিত সংগ্রামী নারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারী মুক্তিযোদ্ধা- ‘মীরাতুন নেসা’কে। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর সুযোগ্য পুত্র ‘মাহবুবুল ইসলাম ইমন’ দীর্ঘদিন ধরে (বিগত ২৫ বছর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাহিত্য-সংস্কৃতি, বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকান্ড, গবেষণা, বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠন, রাজনীতি ও সাংবাদিকতায় ভূমিকা রেখে চলেছেন। বর্তমানে নতুন ধারার গবেষণাধর্মী-সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফাউন্ডেশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বহুল আলোচিত ও প্রশংসিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ এর উদ্যোক্তা ও লেখক তিনি। {অসমাপ্ত/বিস্তরিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ১ম ও ২য় খণ্ড) লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}