বাংলাদেশের অন্যতম সামরিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) সাবেক মহাপরিচালক- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী হাসান ১৯৪৯ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজারামপুরে তাঁর মাতুলালয়ে (নানীর বাড়ি) জন্মগ্রহণ করেন। আলী হাসানের পৈত্রিকনিবাস চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের গৌড়িপুর গ্রামে। তাঁর পিতা ডা. বেলায়েত আলী ও মাতা সুরাতন নেসা।
আলী হাসান ১৯৬৫ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, ১৯৬৭ সালে চট্রগ্রাম সিটি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমী, ডিফেন্স স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ, ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি (চায়না) প্রভৃতি থেকে তিনি সামরিক (মিলিটারী) উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করেন।
১৯৬৯ সালে তৎাকালীন পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তিনি কমিশনপ্রাপ্ত হোন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ১৯৭৫ সালে মেজর, ১৯৮১ সালে লে.কর্নেল, ১৯৮৮ সালে কর্নেল এবং ১৯৯৫ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) এর মহাপরিচালক (১৯৯৩-১৯৯৬), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেটের মহাপরিচালক, ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডেন্ট প্রভৃতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
২০০০-২০০১ সালে তিনি জাতিসংঘ সিয়েরা লিওন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ব্রি.জেনারেল আলী হাসানের নেতৃত্বে সেনা কনটিনজেন্টের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সিয়েরা লিওনের এক দশকের গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। নিরস্ত্রকরণের মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি স্থাপনে বিরল অবদান রাখার এই বিষয়টি বাংলাদেশ ও বর্হিবিশ্বে প্রশংসিত হয়।
চাকুরীরত অবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষদের তিনি বিভিন্ন সহযোগিতা করেছেন। পরবর্তীতে বেসরকারি বহুজাতিক কোম্পানীতে চাকুরীকালীন সময়েও তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বেশ কিছু যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন।
ব্রি.জেনারেল আলী হাসান বাস্কেট বল ও গল্ফ ভালো খেলেন। সাব স্যুটার হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। ২০০৩ সালে তিনি সরকারি চাকুরী হতে অবসরগ্রহণ করেন।
এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক আলী হাসানের সুযোগ্য সন্তান সাদাইন হাসান কর্নেল পদমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন। {অসমাপ্ত……/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী)}