বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-মনোবিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ‘প্রফেসর ড. শওকত আরা সামাদ’ ১৯৪৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মালদহ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের কিছু অংশ) জেলার সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মীর সুলতান আলী এবং মাতা বেগম জাহানারা আলীর প্রথম কন্যা তিনি।
অনার্সসহ দর্শনে মাস্টার্স, পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে তিনি ডবল মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। ভারতের এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৮৩ সালে সামাজিক ও রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ১৯৬৭-৭০ সালে গবেষক ফেলোশিপ প্রাপ্ত হোন। ১৯৭০-৭৫ সালে রাজশাহী সরকারি নিউ ডিগ্রী কলেজ ও রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ পিএসসি কর্তৃক দর্শন বিভাগে প্রভাষক ছিলেন। ১৯৭৫ সালের পর সহকারী, সহযোগী এবং অধ্যাপক হিসেবে পদন্নোতিপ্রাপ্ত হোন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নজান হলের হাউস টিউটর প্রশাসন (১৯৭৫-৭৮), বেগম রোকেয়া হলে প্রভোস্ট (১৯৮৫-৮৮) এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান (১৯৮৮-৯১) হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তিনি বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানী। আমেরিকা, জাপান, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মনোবিজ্ঞান সম্মেলনে যোগদান করেছেন। এ সমস্ত আন্তর্জাতিক মনোবিজ্ঞান সম্মেলনের বিভিন্ন সভায় সভাপতিত্ব করেছেন, গবেষণামূলক প্রবন্ধ পাঠ করেছেন। আমেরিকার ‘ফ্লোরিডার প্রতিধ্বনি গোষ্ঠী’ ১৯৯৪ সালে অধ্যাপক শওকত আরাকে শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক হিসেবে সম্মানিত করে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মনোবিজ্ঞানী হিসেবে ১৯৯৮ সালে আমেরিকা মার্কুইসের ‘Who’s Who in the world’ এ তাঁর বায়োগ্রাফী ছাপানো হয়। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০০১ সালে রাজশাহী তরুণ সংঘ কর্তৃক গুণীজন হিসেবে সংবর্ধিত হোন। ২০০২ সালে খুলনা জেলার নন্দীনী সাহিত্য গোষ্ঠী থেকে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব পদকপ্রাপ্ত হোন। Bangladesh Youth Front ২০০২ সালে প্রফেসর ড. শওকত আরাকে শিক্ষায় অবদানের জন্য শেরে-এ-বাংলা স্মৃতিপদকে ভূষিত করে। পাকিস্তান সাইক্লোজিক্যাল জার্নালে তিনি কনসালটিং এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন অব সাইক্লোজিস্ট এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ সাইক্লোজিক্যাল এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টসহ জড়িত ছিলেন বিভিন্ন জাতীয়-স্থানীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠান-সংগঠনে।
অধ্যাপক শওকত আরা বিয়ে করেছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা সৈয়দ আব্দুস সামাদকে। তাঁদের পাঁচ সন্তান রয়েছে। তাঁদের সুযোগ্য সন্তান- ‘সৈয়দ শাহীন শওকত’ ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। সাবেক ছাত্রনেতা ‘সৈয়দ শাহীন শওকত’ বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন । { অসমাপ্ত…/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ www.alokito-chapainawabganj.com (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ১ম ও ২য় খণ্ড) লেখক- মাহবুবুল ইসলাম ইমন}