সেরাজুল হক শনি মিয়া

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার অন্যতম সফল চেয়ারম্যান সেরাজুল হক শনি মিয়া জন্মেছিলেন ১৯২০ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহারাজপুরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে (মাতুতালয়/নানীর বাড়ি)। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নামোশংকরবাটির মন্ডলপাড়া ছিল তাঁর পৈত্রিক নিবাস। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয়ভাবে গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট ’স্টিয়ারিং’ কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন সেরাজুল হক শনি মিয়া। শনি মিয়াদের বাড়িতেই (বর্তমান শহীদ মনিমুল সড়কের জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে) প্রতিদিন স্টিয়ারিং কমিটির সভা হত। ২১ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর পুণরায় পাকবাহিনীর করায়ত্ব হলে সেরাজুল হক শনি মিয়ার বাড়িটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সামরিক পতনের পর মালদায় গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন সেরাজুল হক শনি মিয়া।
স্বাধীনতা উত্তর সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন সেরাজুল হক শনি মিয়া। ১৯৭৫ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ষ্টেডিয়ামে শিা, সংস্কৃতি, শিল্প ও বাণিজ্য মেলার বর্ণাঢ্য আয়োজন করেছিলেন তৎকালীন পৌরপতি সেরাজুল হক শনি মিয়া। সেই মেলায় ভারতের পদ্মভূষণ খেতাবপ্রাপ্ত প্রখ্যাত কবিয়াল-গুমাণী বিশ্বাসের বিখ্যাত কবিগানের আসরসহ স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন সংস্কৃতিসেবী সেরাজুল হক শনি মিয়া। টাউন কাব, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, জেলা রেডক্রস সোসাইটি’র সাধারণ সম্পাদক, চাঁপাই নবাবগঞ্জ কলেজ ও গার্লস একাডেমীর গভর্নিং বডির সদস্য, বঙ্গবন্ধ্ু সাংস্কৃতিক জোটের প্রধান উপদেষ্টা ও সবুজ সংঘের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সমাজসেবী সেরাজুল হক শনি মিয়া।
বিশিষ্ট রাজনীতিক সেরাজুল হক শনি মিয়া নবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নেতা ছিলেন, সারা জীবন বঙ্গব›দ্ধুর আদর্শের রাজনীতি করেছেন। ১৯৫৪ সালে শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বিভিন্ন সময়ে থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটি’র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সমাজসেবী সেরাজুল হক শনি মিয়া ১৯৯৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী মৃত্যুবরণ করেন। { অসমাপ্ত… / বিস্তারিত প্রকাশিতব্য মূল গ্রন্থ-‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে’(চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংপ্তি জীবনী) }