ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ১৯৭১ সালের ১৯ জুন তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে স্বেছায় অব্যাহতি নেন । মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য ১৯৭১ সালের ৩ জুলাই তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা অতিক্রম করে, পাকিস্তানের শিয়ালকোটের নিকটবর্তী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে আসেন। অত:পর কলকাতায় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর সাথে সাক্ষাত করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তাঁকে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল কাজী নুর-উজ্জামানের অধীনে ৭নং সেক্টরের ‘মহদিপুর সাব-সেক্টরের কমান্ডার’ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি এ সাব-সেক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ এলাকার অসংখ্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। বিজয়োর একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করার শেষ যুদ্ধে ১৪ ডিসেম্বর সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীর কোল ঘেষে রেহাইচর নামক এলাকায় শত্রুবাহিনীর আচমকা গুলিতে তিনি শহীদ হন। ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর ছিলেন একজন দক্ষ, অসমসাহসী যোদ্ধা। মূলত তাঁর যোগ্য নেতৃত্বেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত হয় (১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১)। তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জের পবিত্র সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে ৭ নং সেক্টরের প্রথম সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হকের পাশে তাঁকে লাশ দাফন করা হয়। স্বাধীনতা উত্তরকালে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলা মায়ের দামাল ছেলে ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীরকে বাংলাদেশ সরকার ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাব উপাধিতে ভূষিত করে। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীরের সম্মান ও স্মৃতি রার্থে শাহাদৎ স্থান-চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেহাইচরে একটি স্মৃতিসৌধ, ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ২টি কলেজ ও কাব এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীর উপর নির্মিত সেতুর (বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর সেতু) নামকরণ করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর ১৯৪৯ সালের ৭ মার্চ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে না জন্মালেও যে সকল বিশিষ্ট ব্যক্তির চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান-অর্জন ও কৃতিত্ব রয়েছে, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর তাঁদের মধ্যে অন্যতম । { অসমাপ্ত… / বিস্তারিত প্রকাশিতব্য মূল গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষপ্তি জীবনী) }