জুয়েল আহম্মেদ

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন, অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণকারী, দেশ সেরা-খ্যাতিমান সাঁতারু ‘মো.জুয়েল আহম্মেদ’ ১৯৮৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শীবতলা এলাকার চরজোতপ্রতাপ মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত একরামুল হক এবং মাতা পিয়ারা বেগম। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি পিতা-মাতার জ্যোষ্ঠ সন্তান। তাঁর ছোট চাচা মোহাম্মদ আলম ছিলেন একজন ভালো সাঁতারু। মূলত ছোট চাচার অনুপ্রেরণায় পারিবারিকভাবে জুয়েল আহম্মেদ সাঁতারের প্রতি উৎসাহী হয়ে ওঠেন। তবে হাতেখড়ি কিংবা সাঁতারের প্রথম প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরেক কৃতি সাঁতারু ‘সাব্বির আহমেদের’ কাছ থেকে। খ্যাতিমান সাঁতারু ও সংগঠক সাব্বির আহমেদ ছিলেন ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের’ অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। শৈশব-কৈশোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীতে জুয়েল আহম্মেদ সাঁতার শিক্ষা লাভ করেন।
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বি.কে.এস.পি) থেকে এস.এস.সি (প্রথম বিভাগ), ২০০৩ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এইচ.এস.সি এবং ২০১০ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যায় থেকে বি.এস.এস ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ঢাকার উত্তরা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ) ডিগ্রী লাভ করেন।
১৯৯৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইউথ গেমস অংশগ্রহণ, ১৯৯৯ সালে নেপাল অনুষ্ঠিত অষ্টম সাফ গেমসে চতুর্থ স্থান, ২০০২ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৭তম কমন ওয়েলথ গেমসে অংশগ্রহণ, ২০০৪ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত নবম সাফ গেমসে ৩টি রৌপ্য ও ২টি তাম্র, ২০০৪ সালে গ্রীসে অনুষ্ঠিত ২৮তম অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ, ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৮তম কমন ওয়েলথ গেমসে অংশগ্রহণ, ২০০৬ সালে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত ১০ম এস.এ গেমসে ২টি রৌপ্য, ২০০৭ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত ১ম ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসে ২টি স্বর্ণ, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২য় ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসে ৫টি স্বর্ণ ও ২টি রৌপ্য, ২০১০ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ১১তম এস.এ গেমসে ১টি রৌপ্য ও ১টি তাম্র, ২০১০ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত ৩য় ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসে ২টি স্বর্ণ, ২০০২ সালে বাংলাদেশ গেমসে ৭ টি স্বর্ণ, ১৭তম থেকে ২৪তম (১৯৯৯-২০১১ইং) জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ২৫টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য, ৫টি তাম্রসহ জাতীয়-আর্ন্তজাতিক পর্যায়ের অসংখ্য রেকর্ড রয়েছে কৃতি সাঁতারু জুয়েল আহম্মেদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা থেকে ২০০৩ সালে ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা শতবর্ষ পূর্তি উৎসব সম্মাননা’, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা সম্মাননা, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি (ঢাকা) থেকে শ্রেষ্ঠ সাঁতারু হিসেবে সম্মাননাসহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার-সম্মাননা লাভ করেন। বাংলাদেশ সাঁতারের অহংকার ‘জুয়েল আহম্মেদ’ বর্তমানে `চিফ পেটি অফিসার’ হিসেবে ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীর’ সাঁতার দলের কোচ এর দায়িত্ব পালন করছেন। {অসমাপ্ত…/ বিস্তারিত প্রকাশিতব্য মূল গ্রন্থ- ‘আলোকিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ’ (চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’শো বছর ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী)}